ঢাকা , রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫ , ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ হাসপাতাল ভাঙচুর এখনো ভয় কাটেনি মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থীদের ৪ টেরাবাইট ব্যান্ডউইডথের মাইলফলকে বাংলাদেশ সাবমেরিন অন্তর্বর্তী সরকারের মাঝে শেখ হাসিনার ছায়া দেখা যাচ্ছে-আনু মুহাম্মদ কক্সবাজারে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত পাঁচ ডুমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে হরিলুট বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ আহত ২০ বাকৃবির গবেষণায় পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় অবৈধ দোকানপাটের ছড়াছড়ি অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভ‚মি বাংলাদেশ ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু হাসপাতালে ভর্তি ২০৯ বিপুল ব্যয়েও মিলছে না আশানুরূপ সুফল শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণ আজ বিদেশ থেকে কিছু আঁতেল এসে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়- হাফিজ জজ মিয়ার দুই গোডাউন পুড়ে ছাই কোটি টাকার ক্ষতি শুল্ক আলোচনায় ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা বাংলাদেশের ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের গোপন বৈঠকের পরিকল্পনা তদন্ত শেষে বলা যাবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে কার্যকর শুল্ক ৩৬.৫ শতাংশ বিজিএমইএ সভাপতি জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ ৫ আগস্ট
জনদুর্ভোগের শঙ্কায় রাজধানীবাসী

শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় ছাত্রদল-এনসিপি

  • আপলোড সময় : ০৩-০৮-২০২৫ ০৩:৫৪:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০৮-২০২৫ ০৩:৫৪:৩৪ অপরাহ্ন
শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় ছাত্রদল-এনসিপি
* বড় শোডাউনে দেশবাসীকে চমক দেবে ছাত্রদল * জনভোগান্তির আশঙ্কায় ঢাকাবাসীর প্রতি দুঃখ প্রকাশ ছাত্রদলের * শহীদ মিনারে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা হবে : এনসিপি * জুলাই ঘোষণাপত্র গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার দালিলিক প্রমাণ : তথ্য উপদেষ্টা রাজধানীর মূল প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে আজ রোববার ছাত্র সমাবেশ ডেকেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একই সময়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দুই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে। সমাবেশে বড় জমায়েত করে শক্তি দেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছে দু’পক্ষই। ইতিমধ্যে সমাবেশকে সামনে রেখে সারা দেশের নেতাকর্মীদের রাজধানীতে আসার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রদলের ভ‚মিকা, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং শিক্ষার্থীদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার বার্তা দেবে সংগঠনটি। অপরদিকে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ থেকে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা করবে এনসিপি। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আজ রোববার সমাবেশের নগরীতে পরিণত হবে ঢাকা। তবে ছাত্র সমাবেশ ঘিরে জনদুর্ভোগের আশঙ্কায় ঢাকাবাসীর কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। ছাত্রদলের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাঠ দখল রাখতে চাইছে বিএনপি। ছাত্রদলের সমাবেশে লাখ লাখ নেতাকর্মীদের জমায়েত করে সেই শক্তি প্রদর্শন করতে চাচ্ছে দলটি। প্রতিনিয়তই জেলা, থানা, ওয়ার্ড এবং মহানগর নেতাকর্মীদের সঙ্গে চলছে বৈঠক। ইতিমধ্যে সারা দেশে নেতাকর্মীদের ঢাকায় সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংগঠনের শক্তির বিশেষ বার্তা দিতে চায় ছাত্রদল। এরইমধ্যে এ কর্মসূচি পালনে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি’র হাইকমান্ড। সমাবেশকে সামনে রেখে গত বুধবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে সমাবেশ সফল করার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। একইসঙ্গে সারা দেশের নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেন তারেক রহমান। আজকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ছাত্র সমাবেশ করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ছাত্রদল। এজন্য জেলা, মহানগরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক গঠন করা হয়েছে প্রায় ৯০টি সাংগঠনিক টিম। সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে বড় শোডাউন করার পরিকল্পনা করছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা। কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাংগঠনিক টিমের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটি। সারা দেশে থেকে নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে শক্তিমত্তা প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনটির। তবে গতানুগতিক কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এবারের ছাত্র সমাবেশ কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে করতে চান নেতারা। এজন্য সমাবেশে অংশগ্রহণ নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এবারের ছাত্র সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সমাবেশস্থলে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড থাকবে না। ব্যক্তিগত শোডাউনও নাকচ করা হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদেরও এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। গতকাল শনিবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব তথ্য জানান। ঢাকায় ছাত্র সমাবেশে অংশগ্রহণ নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর মধ্যে রয়েছে-সমাবেশে কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা যাবে না। সমাবেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ইউনিটকে থাকতে হবে। কাঁটাবন মোড় থেকে আজিজ সুপার মার্কেট ও পিজি হাসপাতালের মাঝের গলি দিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত পরিবহণকে চলাচলে সার্বিক সহায়তা করতে হবে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে বহনকারী কোনো ইউনিটের গাড়ি কোনো অবস্থাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। সমাবেশ শেষে সংশ্লিষ্ট ইউনিটের নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার করে যেতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র সমাবেশ করার কথা ছিল ছাত্রদলের। একই দিন একই স্থানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ থাকায় দলটির অনুরোধে পরে ছাত্রদল সমাবেশস্থল শাহবাগে নির্ধারণ করে। এদিন সারা দেশ থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢাকার সমাবেশে যোগ দেবেন। অনেকেই শনিবার ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। আজ রোববার দুপুরে সমাবেশস্থলে যোগ দেবেন তারা। ছাত্র সমাবেশ ঘিরে কেন্দ্র থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় আসা নেতাকর্মীরা নির্দেশনা মেনে নির্ধারিত সময়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত থাকবেন। সড়কে যাতে কোনো ভোগান্তি না হয়, সেজন্য নির্ধারিত সময়ের আগে সমাবেশস্থলে জড়ো হবেন না নেতাকর্মীরা। রোগী ও অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে সাবির্ক সহযোগিতায় থাকবেন দায়িত্বশীল নেতারা। নেতাকর্মীরা জানান, পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি ঘিরে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে ছাত্রদল। দেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন হিসাবে এদিন ছাত্রদল নিজেদের সমর্থন আর শক্তিমত্তা দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজন্য সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে সারা দেশে সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিমের সঙ্গে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার নয়াপল্টনে ভাসানী ভবনে কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গে ঢাকা বিভাগের সব জেলা ও মহানগর ইউনিটের ‘সুপার ফাইভ’ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন বিকাল ৪টায় একই স্থানে ঢাকা বিভাগ ছাড়া সারা দেশের জেলা ও মহানগর ইউনিটের সভাপতি/আহŸায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবদের নিয়ে আরেকটি সভা হয়। ওই দিন বেলা ১১টায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুপার ফাইভ নেতাদের সঙ্গে এবং দুপুর ১২টায় ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সুপার ফাইভ নেতাদের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হয়। সেখানে সমাবেশ সফল করতে সর্বোচ্চ ভ‚মিকা পালন করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা জানান, টিমের সদস্যরা জেলা, মহানগর ছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সমাবেশে উপস্থিত হতে সহায়তা করবেন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব দৈনিক জনতাকে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পতনে আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রদল রাজপথের ভ্যানগার্ড হিসাবে কাজ করেছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনেও ছিল অগ্রণী ভ‚মিকা। ওই আন্দোলনে শুধু ছাত্রদলেরই ১৪২ নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। এরপরও কিছু মহল ওই আন্দোলনকে নিজেদের চেতনা হিসাবে বিক্রি করার অপচেষ্টা করছে। তারা জুলাই আন্দোলনকে কোনো একক পক্ষের হতে দেবেন না। এটা ছিল দেশের সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে আন্দোলন। তারা এই সমাবেশ থেকে জুলাই আন্দোলনে আত্মাহুতি দেওয়া জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করবেন। এখান থেকে দেশ গঠনে ছাত্রসমাজকে সম্পৃক্ত করতে উদাত্ত আহŸান জানাবেন। কোনো কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় যাতে কেউ বিভ্রান্ত না হন সেই আহŸানও থাকবে। বিগত দিনের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দাবিকেও এই সমাবেশ থেকে উচ্চকণ্ঠ দাবিতে পরিণত করতে চান তারা। জামায়াতে ইসলামীর পর এবার বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঢাকায় শাহবাগে ছাত্র সমাবেশে অংশ নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম ছাত্রদল ২০ বগির এই বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশ করবে ছাত্রদল। এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ২০ বগির একটি বিশেষ ট্রেনের জন্য আবেদন করা হয়। ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ রেলওয়ে। আজ রোববার সকাল সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা সোয়া ১টায়। এই ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায় আবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০ বগির ট্রেনটিতে ১ হাজার ১২৬টি আসন রয়েছে। বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলওয়ের চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ বলেন, ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেল ভবনের অনুমোদন সাপেক্ষে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই কারণে নিয়মিত ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহŸায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ দৈনিক জনতাকে বলেন, এই ট্রেনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মী যাবেন। সবাই একসঙ্গে যেতে চাওয়ায় ট্রেন ভাড়া করেছেন। বাসে হলে তা সম্ভব ছিল না। এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করে দলটি। এই চার ট্রেন ভাড়া করতে দলটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা। জামায়াতের ট্রেন ভাড়া করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনায় স্বাভাবিক নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। আজ ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রদলের ছাত্রসমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। তবে সমাবেশের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ছেড়ে দেয় ছাত্রদল। গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় ছাত্রদল। রাজধানীর শাহবাগে আজ রোববার অনুষ্ঠিতব্য ছাত্র সমাবেশ ঘিরে জনদুর্ভোগের আশঙ্কায় ঢাকাবাসীর কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই দুঃখপ্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত জুনে আমরা ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে আমরা এ বিষয়ে অনুমতিও নিয়েছিলাম। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনুরোধে ছাত্রদল শহীদ মিনারের পরিবর্তে শাহবাগে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নেয়। আমরাই ছিলাম একমাত্র বৈধ দাবিদার, তবুও উদার গণতান্ত্রিক চেতনায়, পরমতসহিষ্ণুতার জায়গা থেকে আমরা স্থান পরিবর্তন করেছি, বলেন নাছির। তিনি বলেন, কর্মদিবসে রাজধানীর মতো ব্যস্ত শহরে জনদুর্ভোগের বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করি। তবে গণ-অভ্যুত্থানের স্মরণে বৃহৎ ঐক্যের স্বার্থে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। নাছির উদ্দীন বলেন, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আগাম দুঃখ প্রকাশ করছি এবং আশা করছি নগরবাসী বিষয়টি সহানুভ‚তির সঙ্গে বিবেচনা করবেন। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতিতে আরও সতর্ক থাকবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি। জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে আজ রোববার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ ঘিরে দুই ধরনের প্রস্তুতি রেখেছে দলটির হাইকমান্ড। এরইমধ্যে সরকার ঘোষণাপত্র না দিলে তারা নিজেরাই ঘোষণাপত্র দেবে। আর সরকারের পক্ষ থেকে আজ রোববারের মধ্যে দিয়ে দিলে সমাবেশ থেকেই প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। এদিন ফ্যাসিস্ট পতনের এক দফা কর্মসূচি দিবসও উদযাপন করা করা হবে। এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এনসিপি’র ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ করেছে। গত ১লা জুলাই রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে মাসব্যাপী পদযাত্রা শুরু করেছিল দলটি। ৬১টি জেলায় এই পদযাত্রা করেছে। এনসিপি’র সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পদযাত্রার মধ্যদিয়ে তারা জনগণের কাছে ফিডব্যাক নিয়েছে এবং নিজেদের মতামতসহ সবকিছু কম্বিনেশন করেছে। এটার শেষ পর্যায় হলো সমাবেশ। এসব জেলায় জনগণের ফিডব্যাক নিয়ে ইশতেহার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজকের সমাবেশে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করা হবে। ইতিমধ্যে সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। সমাবেশে অংশ নিতে সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি আহŸান জানিয়েছে এনসিপি। এনসিপি সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ সমাবেশকে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। শুরুতে শুধু ঢাকার জনশক্তির অংশগ্রহণের কথা থাকলেও দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার স্পিরিটকে ধরে রাখতে সারা দেশের নেতাকর্মীদেরও সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগস্ট মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তবে এ ঘোষণা ৫ আগস্টের আগেই দেওয়ার দাবিতে গত কয়েকদিন রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিল আহত জুলাই যোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংগঠন। এরই মধ্যে গত ৩১ জুলাই তিনটি রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির কাছে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২৬ দফা খসড়া পাঠিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে দলগুলো তাদের সংশোধিত মতামত সরকারকে পাঠিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভ‚ঁইয়া ও মাহফুজ আলম জানিয়েছেন ৫ আগস্টের মধ্যে আসছে কাঙ্ক্ষিত জুলাই ঘোষণাপত্র। গত ২৯ জুন সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম জানান, এক মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র না দিলে ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় মিনার থেকে নিজেই ঘোষণা দেবেন। সে অনুযায়ী গত এক মাস তারা নিজেদের রূপরেখা তৈরি করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম আহŸায়ক জাবেদ রাসিন। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রের খসড়া আমরাও প্রস্তুত রেখেছি। আজকালের মধ্যে সরকার ঘোষণা না দিলে আমাদের আহŸায়ক নাহিদ ইসলাম ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পাঠ করবেন। অবশ্য এরই মধ্যে যেহেতু দুই উপদেষ্টা বলেছেন, সরকার ঘোষণাপত্র দেবে। সে বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে। দিয়ে দিলে আমরা এর বিভিন্ন দিক নিয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো। শহীদ মিনার থেকেই নির্ধারণ হবে পরবর্তী কর্মপন্থা। তিনি জানান, সমাবেশে স্বৈরাচার হঁটানোর এক দফা দিবস উদযাপন করা হবে। আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপরেখা দেবেন নাহিদ ইসলাম। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ রোববার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণা দেওয়া হবে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার পর এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে এ কথা জানানো হয়। নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এনসিপি। দলটির প্রত্যাশা, ‘ইতিহাসের এ সন্ধিক্ষণে’ সবার সঙ্গে দেখা হবে। এর আগে গত বুধবার বিকেলে নরসিংদী শহরের পৌরসভার সামনে আয়োজিত পথসভায় এনসিপির আহŸায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ৩ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা দেওয়া হবে। সেদিন সবাইকে শহীদ মিনারে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা সেদিন সঙ্গে থাকলে সব দাবি আমরা আদায় করে ছাড়ব। তথ্য ও স¤প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার রূপকল্প হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র। এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষার দালিলিক প্রমাণ। আগামী ৫ আগস্ট বা তার আগেও জুলাই ঘোষণাপত্র হতে পারে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরির কাজ চলছে। আগামী ৫ আগস্ট বা তার আগে এই সনদ স্বাক্ষরিত হবে। শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই পুনর্জাগরণ র?্যালির পর বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, অভ্যুত্থানকে স্মৃতিতে রাখতে মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন ১৫টি দপ্তর-সংস্থার অধিকাংশই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহের তথ্য প্রচার, ডকুমেন্টস্ (প্রমাণক) সংরক্ষণ এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে কাজ করছে। বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভি গণ-অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক প্রামাণ্যচিত্র ও অনুষ্ঠান প্রচার করছে। তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ করছে। এর পাশাপাশি চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে বেশ কিছু প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের দলিলাদি সংরক্ষণে এরই মধ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত সাংবাদিকদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে তথ্য ও স¤প্রচার উপদেষ্টা বলেন, দলমত-নির্বিশেষে মানুষ এই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের শেষ পর্যায়ে সব পেশাজীবী বিশেষ করে শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সংস্কৃতিকর্মীরা রাজপথে নেমে এসেছিলেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে প্রতিবাদ ও বিজয়ের অনুষঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখান (কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার) থেকে গণ-অভ্যুত্থান শুরু করেছিলাম, এখানে এসে বিজয় উদযাপন করেছি। মাহফুজ আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের আমরা যতদিন স্মরণে রাখব, আহতদের মর্মপীড়া যতদিন অনুভব করব; ততদিন আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব। গত এক বছরে সরকার অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; তার মধ্যে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথে সরকার এগোতে পেরেছে। গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে উপদেষ্টা বলেন, আমরা শহীদদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়েছি, নতুনভাবে দেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। এনসিপি’র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন দৈনিক জনতাকে বলেন, সমাবেশটা জুলাই পদযাত্রার অংশ। সমাবেশে আসার জন্য মানুষকে আমরা আহŸান জানিয়েছি। আশা করছি, আমাদের ডাকে জনগণ সাড়া দেবে। আর সমাবেশে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কেন ঘটবে? বিএনপি এবং ছাত্রদলও আমাদের অভ্যুত্থানের বন্ধু। জামায়াত এবং শিবিরও আমাদের অভ্যুত্থানের বন্ধু। সেখানে কেন এগুলো হবে? এদেশে কিছু সুশীল আছে এবং মুজিববাদী ও বামপন্থিরা আছে-এগুলো তারা জনগণের মধ্যে রটায়। রটিয়ে জনগণের মধ্যে একটা ভীতি সৃষ্টি করতে চায়।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স